Breaking

Thursday, 19 March 2020

রবার্ট ফ্রস্টের নির্বাচিত কবিতা (Robert Frost's Selected Poems)

রবার্ট ফ্রস্ট (১৮৭৪ - ১৯৬৩)


লেখকের জীবনী

রবার্ট লী ফ্রস্ট (Robert Lee Frost) ১৮৭৪ সালের ২৬শে মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সান ফ্রান্সিসকো অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন৷ তার পিতার নাম প্রেস্টকোন ফ্রস্ট, জুনিয়র (Prestcott Frost, Jr)৷ তিনি ছিলেন নিউ ইংল্যান্ডের অধিবাসী৷ তার মাতার নাম ইসাবেল মোডি (Isabelle Moodie)৷ তিনি ছিলেন স্কটল্যান্ডের অধিবাসী যিনি এডিনবার্গ থেকে আমেরিকাতে এসেছিলেন৷ বাল্যকালে ফ্রস্ট ছিলেন রোগাটে (sickly) ও বাতিকগ্রস্থ (neurotic)৷ ফ্রস্টের বয়স যখন মাত্র ১১ বছর তখন তার পিতা যক্ষা রোগে মারা যান৷ ফ্রস্ট তার পরিবারের সাথে নিউ ইংল্যান্ড যান তার পিতাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করতে৷ তার পিতার শেষ ইচ্ছা ছিল যে তার মৃতদেহ যেন তার আদি নিবাস নিউ ইংল্যান্ডে শায়িত করা হয়৷ যেহেতু ফ্রস্টের পরিবারের কাছে সান ফ্রান্সিসকো ফেরত যাবাবর জন্য পর্যাপ্ত টাকা ছিলনা, তারা নিউ হ্যাম্পশায়ার অঞ্চলের সালেম (Salem) গ্রামে বসতি গড়লেন৷ এভাবে বালক রবার্ট ফ্রস্ট তার বাল্যকালে জন্মস্থান থেকে দুরে সরে গিয়ে এক নতুন অপিরিচিত পরিবেশে বড় হতে লাগলেন৷

পরিবারের ভরণ-পোষণের জন্য ফ্রস্টের মাকে শিক্ষিকার পেশে বেছে নিতে হয়েছিল৷ ফ্রস্ট ১৮৯২ সালে ডার্টমাউথ কলেজে ভর্তি হোন৷ লরেন্স হাইস্কুলে পড়া অবস্থাতেই ফ্রস্ট বৃত্তি লাভ করেন৷ ১৮৯২ সাল থেকেই ফ্রস্ট তার মায়ের সামান্য আয়ের সংসারে তার সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করতে থাকেন৷ এজন্য তিনি কারখানা শ্রমিকের পেশা থেকে শুরু করে সংবাদ প্রতিবেদকের পেশা সহ যেকোন পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেন৷ তবে তিনি অবসর সময় পাওয়া মাত্রই কবিতা লিখতেন৷তার কবিতা মাই বাটারফ্লাই (My Butterfly) নিউ ইয়র্ক ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এবং এর পরই তিনি তার ছয়টি কবিতা টোয়াইলাইট (Twilight) নামক পুস্তিকায় প্রকাশ করেন৷

১৮৯৫ সালে তিনি তার স্কুল সহপাঠী এলিনর হোয়াইট (Elinor White) নামক একজন মহিলাকে বিয়ে করেন এবং স্কুল শিক্ষক হিসেবে নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে চেষ্টা করেন৷ নিজেকে কলেজে শিক্ষকতা করার উপযোগী করে তুলতে তিনি হার্ভার্ড কলেজে দুই বছর অধ্যায়ণ করেন৷ কিন্তু তিনি সেখানে অস্বস্তি বেধ করতে শুরু করেন এবং হাঁস-মুরগির খামার ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করেন৷ ১৯০৬ সালে তার তীব্র নিউমোনিয়া হয় এবং তিনি সেরে উঠেন৷ এরপর থেকেই তিনি পুরোদমে কবিতা লেখা শুরু করেন৷ কিন্তু আর্থিক অনটনে তিনি আবার পিঙ্কারটন একাডেমি নামক স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন৷

পুনয়ায় তার পেশায় অসন্তুষ্ট হলে তিনি তার খামার বিক্রি করে দেন এবং সপরিবারে ইংল্যেন্ডে পাড়ি জমান৷ সেখানে তারা বাকিংহামশায়ারের বিকন্সফিল্ড নামস স্থানে বসতি স্থাপন করেন৷ সেখানে পুনরায় কবিতা লেখায় মনোনিবেশ করেন৷

ফ্রস্ট ১৯১৫ সালে আমেরিকায় ফেরত আসেন এবং নিউ ইংল্যান্ডের ফ্রাঙ্কোনিয়া নামক স্থানে একটি ছোট খামার কিনে কৃষিকাজ করার সিদ্ধান্ত নেন৷ তিনি কবি হিসাবে খ্যাতি লাভ করেন এবং আমেরিকান একাডেমিতে সদস্যপদ ও পুলিৎজার পুরষ্কারের মতো বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হন৷ ১৯৬১ সালে প্রেসিডেন্ট জন এফ. কেনেডির অভিষেক অনুষ্ঠানে দ্যা গিফট্ আউটরাইট (The Gift Outright) কবিতা আবৃত্তি করার জন্য অমন্ত্রিত হন৷

রবার্ট ফ্রস্ট ১৯৬৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন৷


উল্লেখযোগ্য কর্ম


ফ্রস্ট তার কবিতার প্রথম খণ্ড এ্যা বয়'স উইল (A Boy's Will) ১৯১৩ সালে প্রকাশ করেন৷ এসময় তিনি ইংল্যান্ডে ছিলেন৷ এ কবিতাগুলোর বিষয়বস্তু ছিল স্মৃতিকাতরতা (nostalgia), বিষাদবিমুখতা (stoicism), প্রকৃতির গ্রামীণ পরিবেশের সাথে একাত্মতা প্রকাশ


নর্থ অফ বোস্টন (North of Boston) ১৯১৪ সালে প্রকাশিত হয়৷ এ কাব্যগ্রন্থে নাটকীয় স্বগতোক্তি (dramatic monologue)  অস্বাভাবিক মনস্তত্ব (abnormal psychology) -এর প্রতি কবির আগ্রহ ও অসামান্য দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায়৷

আমেরিকা  তে ফিরে আসার পর ১৯১৬ সালে তিনি মাউন্টেন ইন্টারভ্যাল (Mountain Interval) নামক কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেন৷ এ কাব্যগ্রন্থে প্রেমগাথা (love-lyrics), বিবরণী (narratives), ও নীতিকথামূলক বর্ণনা (aphoristic descriptions) প্রকাশ পায়৷

১৯২৩ সালে ফ্রস্ট নিউ হ্যাম্পশায়ার (New Hampshire) প্রকাশ করেন৷ এ কাব্যগ্রন্থে ফ্রস্টের কিছু শ্রেষ্ঠ কবিতা স্থান পায় যা তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করে৷

১৯৩৬ সালে ওয়েস্ট রানিং ব্রুক (West Running Brook) প্রকাশিত হয়৷ এই কাব্যগ্রন্থের এমন নামের উদ্দেশ্যে হলো সব ব্রুক (ছোট নদী) পূর্ব দিকে প্রবাহিত হলেও কবির ব্রুক পষ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়৷ এ কাব্যগ্রন্থে কবির অবাধ্য মনকে প্রকাশিত করে৷ তিনি এ কাব্যগ্রন্থে দেখান যে প্রকৃতি আক্রমণাত্বক ও নিষ্ঠুর কিন্তু মানুষ শীতল, শান্ত ও বীরত্বপুর্ণ৷


নর্থ অফ বোস্টন (North of Boston) ১৯১৪ সালে প্রকাশিত হয়৷ এ কাব্যগ্রন্থে নাটকীয় স্বগতোক্তি (dramatic monologue)  অস্বাভাবিক মনস্তত্ব (abnormal psychology) -এর প্রতি কবির আগ্রহ ও অসামান্য দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায়৷

আমেরিকা  তে ফিরে আসার পর ১৯১৬ সালে তিনি মাউন্টেন ইন্টারভ্যাল (Mountain Interval) নামক কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেন৷ এ কাব্যগ্রন্থে প্রেমগাথা (love-lyrics), বিবরণী (narratives), ও নীতিকথামূলক বর্ণনা (aphoristic descriptions) প্রকাশ পায়৷

১৯২৩ সালে ফ্রস্ট নিউ হ্যাম্পশায়ার (New Hampshire) প্রকাশ করেন৷ এ কাব্যগ্রন্থে ফ্রস্টের কিছু শ্রেষ্ঠ কবিতা স্থান পায় যা তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করে৷

১৯৩৬ সালে ওয়েস্ট রানিং ব্রুক (West Running Brook) প্রকাশিত হয়৷ এই কাব্যগ্রন্থের এমন নামের উদ্দেশ্যে হলো সব ব্রুক (ছোট নদী) পূর্ব দিকে প্রবাহিত হলেও কবির ব্রুক পষ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়৷ এ কাব্যগ্রন্থে কবির অবাধ্য মনকে প্রকাশিত করে৷ তিনি এ কাব্যগ্রন্থে দেখান যে প্রকৃতি আক্রমণাত্বক ও নিষ্ঠুর কিন্তু মানুষ শীতল, শান্ত ও বীরত্বপুর্ণ৷

১৯৩৬ সালে এ্যা ফারদার রেঞ্জ (A Further Range) কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়৷ এ কবিতাগুলিতে কবির ধর্ম উপদেশ দেওয়ার প্রবণতা প্রকাশ পায় এবং

১৯৪২ সালে প্রকাশিত হওয়া এ্যা উইটনেস ট্রি (A Witness Tree) -তে ফ্রস্টের শ্রেষ্ঠ কাব্যচর্চার পরিচয় পাওয়া যায়৷ উক্ত খন্ডের দ্যা গিফট্ আউটরাইট (The Gift Outright) কবিতাকে  আমেরিকার সর্বশ্রেষ্ঠ দেশাত্ববোধক কবিতা হিসাবে মনে করা হয়

টু মাস্কস্ঃ এ্যা মাস্ক অফ  রিজন (Two Masques: A Masques of Reason) ১৯৪৫ সালে প্রকাশিত হয় এবং এ্যা মাস্ক অফ মার্সি (A Masque of Mercy) ১৯৪৭ সালে প্রকাশিত হয়৷ এ কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলি ধর্মবিষয়ক নানা প্রশ্ন ও উত্তর সম্বলিত৷ এবং এসব উত্তরে ফ্রস্টকে সন্তুষ্ট বলেই মনে হয়

১৯৪৭ সালে প্রকাশিত হয় স্টিপল্ বুশ (Steeple Bush)৷ এ কবিতাটি একজন বিজ্ঞানীকে কেন্দ্র করে যনি সবকিছু জানেন বলে মনে করেন

ইন দ্যা ক্লিয়ারিং (In The Clearing) ১৯৬২ সালে প্রকাশিত হয়৷ এখানে কবি তার বিশ্বাসকে আরো দীর্ঘস্থায়ী পরিশোধন করতে চান৷ এমন ভাবে বিশ্বাসকে স্থায়ী করতে চান যেন সেটা স্থায়ী হয়, যেন কোন সংশয়পূর্ণ বিশ্বাস না হয়ে থাকে

রবার্ট ফ্রস্টের পূর্ববর্তী কাজ পরবর্তী কাজের তুলনায় ভিন্ন৷ তবুও সেগুলোর প্রত্যেকেই তার ব্যক্তিত্ব ও প্রজ্ঞা বহন করে


আফটার অ্যাপল-পিকিং (After Apple-Picking)

সারমর্মঃ বক্তার লম্বা ও দ্বিমুখী মই স্বর্গমুখী একটি গাছের সাথে লাগানো৷ এখনও একটি পিপে খালি ও দুটি গাছের আপেল পাড়া বাকি৷ বক্তা আপেলের গন্ধের মধ্যে অবস্থান করার কারণে তন্দ্রাচ্ছন্ন৷ বক্তা তার দৃষ্টি থেকে কিছুতেই অস্বাভাবিকতা কাটাতে পারছেন না৷ তার এ অস্বাভাবিকতা হয়েছিল একটি গ্লাসের মধ্য দিয়ে শুভ্র ঘাস (hoary grass) -এর দিকে তাকানোর ফলে যেটি তিনি সকালে পান করার সময় পেয়েছিলেন৷ এর ফলে এটি গলে যায় এবং তিনি তা ফেলে দেন ও ভেঙ্গে ফেলেন৷ গ্লাসটি ভাঙ্গার আগে তার ঘুমাতে যাচ্ছিলেন৷ তাই তিনি বলতে পারতেন কোন ধরণের স্বপ্ন তিনি দেখেতে পারেন৷ তার স্বপ্নে বিরাট আকৃতির আপেল আবির্ভূত হয় ও চলে যায়৷ বোঁটার দিক, কুঁড়ির দিক এবং লালচে-বাদামি দিক স্পষ্ট ফুটে উঠছিল৷ তার পায়ের তলা মইয়ের চাপে ব্যাথা করছে৷ ডালের আগা বাঁকা হয়ে যাচ্ছে এবং এতে মইও প্রভাবিত হচ্ছে৷ তিনি নিচের ঝুড়ি থেকে আপেল গড়িয়ে পড়ার শব্দ শুনতে পাচ্ছেন৷ এর কারণ তিনি অনেক বেশি আপেল পেড়েছিলেন৷ তিনি অধিক ফলনে নিজেই অতি ক্লান্ত৷ এখনও শহশ্রাধিক আপেল ধরা, সেগুলো নিয়ে খেলা করা ও সেগুলো মাটিতে ফেলা বাকি৷ আপেলে দাগ থাকুক  বা না থাকুক, প্রতিটি আপেলই রস নিঃসরণের জন্য স্তুপ করা হয়েছে৷ যে কেউই দেখতে পারে কি ধরণের ঘুম তিনি ঘুমাতে পারেন এবং কিসে এ ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে৷ এমনকি উডচাক (Woodchuck, এক ধরণের কাঠবিড়ালী) -ও বলতে পরবে সেই ঘুম কি তার মতো লম্বা ঘুম নাকি কোন মানুষের ঘুম


বার্চেস (Birches)

সারমর্মঃ যখন বার্চ (ভুর্জবৃক্ষ) যখন এদিক ওদিক দোলে তখন কবির কাছে মনে হয় যেন কিছু বালক গাছগুলোকে দোলাচ্ছে৷ বৃষ্টির পর গাছগুলো বরফে আচ্ছাদিত হয়৷ কিন্তু যখন মৃদু বাতাস বয় তখন তারা নিজেদের মধ্যেই টকটক শব্দ করে৷ বাতাসের ঘুর্ণন বরফের বহিরাবরণকে চুর্ণ করে দেয়৷ তখন সেগুলো বর্ণিল রুপ লাভ করে৷ স্ফটিকগুলো চুরমার হয়ে যায় বরফধ্বসের চাপে৷ তারা পরিমাণে এতো যে আপনার মনে হবে স্বর্গের ভেতরদিকের চূড়া খসে পড়েছে৷ গাছগুলো যখন বেশি বেঁকে যায় তখন আর সোজা হতে পারেনা৷ তাদের সেই বেঁকে যাওয়া নল বনের চূড়ার ন্যায় হয়ে যায়৷ গাছের পাতা এমনভাবে মাটিতে পড়ে যেন বালিকারা রোদে হাঁটু গেড়ে বসে তাদের চুল মাথার সামনে এনে শুকাচ্ছে৷ সত্যি কথা হলো বরফের ঝড়ে বার্চ গুলো অবস্থা সেরকমই হয়৷ কিন্তু কবির মতে কিছু বালক শহর থেকে অনেক দুরে বেইসবল (আমেরিকায় প্রচলিত ক্রিকেট জাতীয় এক ধরণের খেলা) খেলা শিখতে এসে বার্চ (তাদের পিতাদের গাছ) নিয়ে খেলা করে, বারবার সেগুলোর উপর চড়ে বসে এবং সেগুলোকে বাঁকিয়ে দেয়৷ কবিও সেভাবে গাছগুলোর দৃঢ়তা কেড়ে নেন৷ তিনি একের পর এক সব গাছকেই ্এমন করেন৷ কবি নিজেও একসময় বার্চে আরোহণকারী বালক ছিলেন৷ এখন তিনি স্বপ্ন দেখেন আবার বালক বয়সে ফিরে যাওয়ার, বিশেষত যখন বিবেচনাবোধে ক্লান্তি ও জীবনের বিভিন্ন সমস্যার কারণে বিরক্তি অনুভব করেন৷ তিনি কিছুদিনের জন্য পৃথিবী থেকে দুরে সরে থাকতে চান৷ এরপর ফিরে এসে নতুন করে সবকিছু শুরু করতে চান৷ তবে তিনি স্থায়ীভাবে পৃথিবী থেকে দুরে থাকতে চান না কেননা পৃথিবী হলো ভালোবাসার জন্য উত্তম স্থান৷ তিনি ভালোবাসার জন্য এর চেয়ে বেশি ভালো জায়গা খুঁজে পান না৷ সেজন্য কবি বার্চ গাছের কালো শাথা বেয়ে বরফ শুভ্র ডগা বেয়ে স্বর্গে যেতে চান, যতক্ষণ না  গাছটি তার ভার সইতে পারে৷ এতে গাছটি বেঁকে গিয়ে তাকে আবার নিচে নামিয়ে দিবে৷ স্বর্গে যাওয়া ও আসার জন্য এটিই ভালো


মেন্ডিং ওয়াল (Mending Wall)

সারমর্মঃ প্রকৃতিতে এমন কিছু আছে যা দেয়াল পছন্দ করেনা৷ অর্থাৎ, দুটি জিনিসের মধ্যে কোন প্রকার বাধা প্রকৃতি পছন্দ করেনা৷ যদি কোনকিছু উপরে উঠতে শুরু করে, কোন এক রহস্যময় শক্তি সেটাকে নিচে নামিয়ে দেয়৷ তবে শিকারীর কাজ অন্য একটা বিষয় কেননা তিনি একটা পাথরের উপর আরেকটা পাথর রাখেন না যাতে খরগোশ লুকাতে না পারে৷ বসন্তকালে দেয়ালের মধ্যে কিছু ফাঁকা দেখা যায়৷ যুবক বক্তা তার বয়স্ক প্রতিবেশিকে ব্যপারটি অবহিত করেন৷ তারা সাক্ষাত করেন এবং দেয়ালটিকে পুনরায় মেরামত করেন৷ কিন্তু বক্তা বলেন যে, তিনি মনে করেন তাদের দুজনের মধ্যে দেয়ালের প্রয়োজন নেই৷ কেননা তার প্রতিবেশির পাইন গাছের ক্ষেত ও তার আপেলের বাগান৷ পাইন গাছ ও আপেলের বাগান একে অন্যের ক্ষেতে প্রবেশ করে না৷ কিন্তু তার প্রতিবেশি দেয়ালের যথার্থতা বোঝাতে বলেন যে, ভালো বেড়া/দেয়াল ভালো প্রতিবেশির সৃষ্টি করে (Good fences make good neighbours)৷ বক্তা দ্বিমত করে বলেন যে, সেটা তখন ঠিক হতো যদি তাদের কোন গরু থাকত যেটি তাদের শস্যসমূহ সাবাড় করতো৷ তার ্প্রতিবেশি আবারও বলেন যে, ভালো বেড়া/দেয়াল ভালো প্রতিবেশির সৃষ্টি করে৷ তিনি উপরিভাগে শক্ত করে ধরে একটি পাথর নিয়ে আসেন৷ বক্তার কাছে মনে হলো যেন প্রস্তর যুগের অস্ত্র সজ্জিত কোন বন্য ব্যক্তি৷ বক্তার কাছে মনে হলো, তিনি যেন অজ্ঞতার অন্ধকারে ঢুকে গেলেন


দ্যা ডেথ অফ দ্যা হায়ার্ড ম্যান (The Death of the Hired Man)

সারমর্মঃ কৃষক ওয়ারেনের স্ত্রী মেরি তার স্বামীর জন্য টেবিলে অপেক্ষা করছিল৷ তার আসার শব্দ শুনে মেরি চুপিসারে ছুটে যায় অন্ধকার পথ ধরে৷ দরজায় তার সাথে ওয়ারেনের দেখা হয়৷ সেখানে সে ওয়ারেনকে খবর দেয় যে সাইলাস, তাদের পুরোনো কাজের লোক আবার ফিরে এসেছে৷ সে ওয়ারেনকে সাইলাসের প্রতি দয়াশীল হতে বলে৷ তারপর সে ওয়ারেনের হাত ধরে তাকে নিজের পাশে কাঠের মেঝেতে বসায়

ওয়ারেন মেরিকে বলে যে সে সর্বদাই সাইলাসের প্রতি দয়ালু ছিল৷ কিন্তু সাইলাস তার দয়ার উপযুক্ত প্রতিদান দেয়নি৷ সে সাইলাসকে শেষ ফসল তোলার মৌসুম পর্যন্ত থাকতে বলে৷ সাইলাস আসলে তেমন কাজের না এবং নির্ভরযোগ্যও না৷ সে পালিয়ে গেল যখন তাকে ওয়ারেনের সবচেয়ে বেশি দরকর ছিল৷ সাইলাস একটু বেশি পারিশ্রমিক দাবি করছিল কিন্তু তাকে কোন নির্দিষ্ট অংকের পারিশ্রমিক দেওয়ার সামর্থ ওয়ারেনের ছিল না৷ তখন সাইলাস তাকে বলল যে অন্য কেউ তাকে এমন পারিশ্রমিক দিতে পারবে৷ তাই ফসল তোলার সময়ই সে চলে গেল যখন ওয়ারেনের সাহায্যের খুব প্রয়োজন ছিল৷ এখন, শীতকালে তাকে দরকার না থাকা সত্ত্বেও সে এলো

মেরি ওয়ারেনকে বলল যে, সে চুলার পাশে ঘুমন্ত ছিল৷ যখন মেরি রোওয়'স (Rowe's) থেকে ফিরে আসার পথে সে সাইলাসকে সেখানে পেল৷ খামার ঘরের দরজার সামনে জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল৷ এটা তার কাছে খুব দুঃখজনক ও ভয়ানক একটি দৃশ্য ছিল৷ মেরি ওয়ারেনকে আরোও বলল যে, মেরি জানতে চেযেছিল যে সাইলাস এতদিন কোথায় ছিল৷ সাইলাস তাকে কোন উত্তর দেয়নি বরং শুধু মাথা নাড়ালো৷ বেচারার কাছে নিজের আত্ম-সম্মানবোধ রক্ষা করার এ যেন এক নীচ উপায়৷ সে আসলে এসেছিল তৃণভূমি পরিষ্কার করতে৷ সে সাধারণত সবকিছু তালগোল পাকিয়ে ফেলত৷ সে চেয়েছিল হ্যারল্ড উইলসন (Harold Wilson) -কে ফিরে এসে তার সাথে সহকর্মী হিসেবে যোগ দিতে যেহেতু সে কিছু বছর আগেও ছিল৷ কিন্তু উইলসন স্কুলজীবন শেষ করে কলেজে পাঠদান শুরু করেছিল৷ পুরো জুলাই মাস জুড়ে তপ্ত রোদে হ্যারল্ড ও তার মধ্যকার ঝগড়ার স্মৃতি এখনও তাকে স্বপ্নের মতো তাড়া করে৷ হ্যারল্ডের যুবক কলেজ ছাত্রের নিশ্চয়তা সাইলাসকে ত্যক্ত করে৷ সাইলাসের মনে হ্যারল্ড ল্যাটিনের সাথে জড়িত

সাইলাস ম্যারিকে জিজ্ঞেস করল যে, হ্যারল্ডের ভায়োলিনের মতো ল্যাটিন শিখাকে মেরির কাছে কেমন মনে হয়? কেননা সাইলাসের সেটা পছন্দ হয়েছে৷ সাইলাস ভেবেছিল যে হ্যারল্ড স্কুল থেকে বেশি কিছু শিখতে পারেনি৷  সাইলাস প্রায়ই ভাবত যে সে যদি হ্যারল্ডকে খড়ের গাদা তৈরি করার পদ্ধতি শিখিয়ে দেওয়ার  আরেকটি সুযোগ পেত!

ওয়ারেন একমত হয় যে, এটা সাইলাসের একটি অর্জন মেরি আবার বলতে শুরু করে, যদি সাইলাস হ্যারল্ডকে খড়ের গাদা তৈরি করার উপায় আবার সেখাতে পারত তাহলে সে কারো কাছে নিজেকে কিছুটা ভালো বলে মনে করতে পারত৷ সে একটা বালককে বইয়ের বোকা দেখতে ঘৃণা করে৷ অন্য লোকের ব্যপারে তার অনেক চিন্তা ভাবনা থাকেলেও নিজের কাছে অতীত গৌরবের কিংবা ভবিষ্যৎ আশার কিছুই ছিলনা

চাঁদ পশ্চিম দিকে হেলে পড়ছিল৷ চাঁদের আলো কোমলভাবে মেরির কোলে পড়ছিল৷ সে তার অ্যাপ্রন সেদিকে ছড়িয়ে দিল৷ সকালের মহিমান্বিত রশ্নির মত তার আঙ্গুলগুলো হার্প (এক ধরণের বাদ্য যন্ত্র বিশেষ) -এর উপর রাখল যেন সে ওয়ারেনের জন্য রচনা করা, সজীবতা পূর্ণ এক সুর বাজাতে থাকলো যা আগে কখনও শোনা হয়নি৷ সে ওয়ারেনকে বলল যে সাইলাস ঘরে ফিরে এসেছে মৃত্যুবরণ করতে এবং ওয়ারেনের ভয়ের কোন কারণ নেই কেননা সে আর কোথাও পালিয়ে যাচ্ছেনা৷ তাদের ঘরটি যে সাইলাসেরও ঘর এ ব্যপারে ওয়ারেন একমত হতে পারল না৷ কিন্তু মেরি বলল, আমি এটাকে এমন কিছু ভাবতে পারি যেটা তুমি যেকোন ভাবেই হোক, কখনও দাবি করতে পারোনা৷ ওয়ারেন বলল যে সাইলাসের উচি তার ধনী ভাইয়ের কাছে চলে যাওয়া৷ মেরি বলল যে সাইলাসের ভাই তাকে সাহায্য  করতে বাধ্য৷ কিন্তু সেটার কথা মেরি পরে ভাববে৷ এই মুহুর্তের জন্য মেরি সাইলাসকে দয়া করার জন্য ওয়ারেনকে অনুরোধ করল৷ কিন্তু মেরি মনে করলো নিজের ভাইয়ের কাছে জ্ঞাতিত্বের দাবি জানাতে সাইলাসের হয়তো কোন গৌরব নেই৷ সাইলাস এমন এক ধরণের মানুষ যে জ্ঞাতিবোধ সহ্যই করতে পারেনা৷ সে হয়তো অকর্মন্য কিন্তু তার ভাইয়ের কাছে চাইতে সে লজ্জাবোধ করে

ওয়ারেন বলল যে সে কখনও কাউকে আগাত দেওয়ার কথা ভাবতেও পারেনা৷ কিন্তু মেরি বলল যে সে মেরিকে সেদিন আঘাত দিয়েছে যেদিন ওয়ারেন চেয়ারের পেছনের সূচালো অংশে মাথা হেলান দিয়েছে ও গড়িয়েছে৷ সে মেরিকে, তাকে লাউঞ্জ (Lounge, এক ধরণের বিশ্রাম ঘর) -এ রেখে আসতে দেয়নি৷ এরপর মেরি ওয়ারেনকে বলল সাইলাসের জন্য কিছু করা যায় কিনা দেখে আসতে৷ সেই রাতে মেরি সাইলাসের জন্য সেখানে বিছানা প্রস্তুত করে রেখেছে৷ সে অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছিল, তার কাজ করে খাওয়ার দিন ফুরিয়ে গিয়েছিল৷ ওয়ারেন চলে গেল৷ ছোট ভেসে থাকা মেঘ চাঁদকে যেন আঘাত করল৷ ওয়ারেন খুব তাড়াতাড়ি ফিরে এল৷ মেরির পাশে এসে বসল এবং তার হাত ধরল৷ মেরি যখন সাইলাসের ব্যপারে জিজ্ঞেস করলো, তখন ওয়ারেন উত্তর দিল, মৃত


দ্যা রোড নট টেকেন (The Road Not Taken)

সারমর্মঃ কবি একটি বনের মধ্যে দ্বিমুখী রাস্তার সামনে এসে দাড়ালেন৷ তখন তিনি একটি প্রশ্নের মুখামুখি হলেন যে তিনি কোন পথটি বেছে নিবেন৷ একজন ভ্রমণকারী হিসাবে তিনি একই সাথে দুটি পথে যেতে পারেন না৷ তিনি দুটি পথের একটির দিকে তাকালেন৷ সেটি ছিল পদদিলত৷ কিন্তু তিনি যখন অন্য পথটির দিকে তাকালেন তখন দেখলেন যে, সেটি ছিল তরতাজা এবং পদদলিত নয়৷ অর্থা, সেটা তেমন ব্যবহারই হয়নি তিনি সেই অব্যবহৃত পথটি বেছে নিলেন যদিও তিনি দ্বিধায় ছিলেন যে তিনি ফিরে আসতে পারবেন কিনা কেননা এক পথ অন্য পথের জন্ম দেয় তার এ স্বিদ্ধান্ত ছিল গুরুত্বপুর্ণ কেননা এটি তার জীবনের সফলতার পথ৷ তিনি এও ধারণা করলেন যে তিনি পরবর্তী যুগকে বলতে পারবেন যে তিনি সঠিক পথটিই বেছে নিয়েছিলেন


একোয়েইন্টেড উইথ দ্যা নাইট (Acquainted with the Night)

সারমর্মঃ কবি রাতের সাথে সুপরিচিত অর্থাৎ, তিনি রাতের ভেতর ও বাহিরের খবর ভালোভাবেই জানেন৷ তিনি বৃষ্টির মধ্যে বাইরে হাঁটতে বের হয়েছিলেন ও ফেরত এসেছিলেন৷ তিনি সীমানার পর্যন্তও হেঁটেছেন৷ তিনি সর্বাপেক্ষা দুঃখী শহুরে গলি দেখেছেন৷ এদিক-সেদিক পাহারারত নৈশপ্রহরীকে অতিক্রম করেছেন৷ পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় তিনি তার চোখের দৃষ্টি নিচু তথা অবনত করেছেন নাহলে প্রহরীর জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হবে কেন তিনি রাতের এ সময়ে বেরিয়েছেন৷ অন্য একটি রাস্তায় কান্নার শব্দ শুনে তিনি হঠাৎ করেই থমকে দাড়ান৷ তিনি অপার্থিব উচ্চতায় উজ্জ্বল একটি ঘড়ি দেখে ঠায় দাড়িয়েছিলেন৷ ঘড়িটি ঘোষণা করল যে  সেই সময়টা ঠিকও নয়, ভুলও নয়


ট্রি এট মাই উইন্ডো (Tree at My Window)

সারমর্মঃ কবি তার শোবার ঘরের জানালার বাইরে অবস্থিত একটি গাছকে নির্দেশ করেন৷ তিনি রাতে জানালা বন্ধ করেন কিন্তু কবি বলেন যে তিনি ও গাছটির মধ্যে কোন পর্দা থাকবে না৷ গাছটিকে মনে হয় যেন মাটি থেকে উঁচুতে অবস্থাররত ঝাপসা স্বপ্নে বিভোর একটি মাথা৷ গাছের জোড়ালো শব্দের সবই জ্ঞানগর্ভ নয়৷ কিন্তু কবি দেখলেন যে প্রবল বাতাস গাছটির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং গাছটিকে দোলাচ্ছে৷ গাছটিও হয়তো ঘুমন্ত কবিকে স্বপ্নে বিভোর হতে দেখেছে, এতোটাই বিভোর যে তিনি যেন হারিয়েই গিয়েছেন৷ নিয়তিরও নিজেকে নিয়ে নিজস্ব কল্পনা আছে৷ নিয়তি ঠিক করেছে যে গাছটি বাইরের আবহাওয়া এবং কবি ভেতরকার আবহাওয়ার ব্যপারে অবগত হবেন এবং মনের যুদ্ধাবস্থায়


স্টাডি গাইড থেকে অনুপ্রাণিত...

No comments:

Post a Comment